প্রকাশিত: Sun, Jul 23, 2023 10:49 AM
আপডেট: Mon, May 12, 2025 12:19 AM

[১]আন্দোলনের দ্বিতীয় ধাপে বিএনপি, ২৭ জুলাই রাজধানীতে সমাবেশ [২]পদত্যাগের এক দফা না মানলে ফয়সালা হবে রাজপথে: মির্জা ফখরুল

শাহানুজ্জামান টিটু: [৩] নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফা দাবিতে বিএনপির নেতৃত্বে যুগপৎ আন্দোলনের দ্বিতীয় ধাপে নতুন এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। অবিলম্বে এই সরকার ও শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। তাই সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে আর কালবিলন্ব না করে পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত করে নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে তার হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। দাসানুদাস নির্বাচন কমিশন বাতিল করে নতুন কমিশন গঠন করুন।

[৩] শনিবার বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির তিন সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ উদ্যোগে ঢাকা বিভাগীয় তারুণ্যের সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। 

[৪] তিনি সমাবেশের উদ্দেশ্যে জানতে চান, এক দফা না মানলে ফয়সালা হবে কোন পথে? সমাবেশ থেকে জবাব আসে, রাজপথে। তিনি জানতে চান, দফা এক দাবি এক, উপস্থিত জনতা উত্তরে বলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগ। এসময় তিনি বলেন, আমরা নতুন বাংলাদেশের জন্য ভোটাধিকারের জন্য আন্দোলন করছি। 

[৫] মির্জা ফখরুল বলেন, গত ১৪-১৫ বছরে এই সরকার দেশের যত ক্ষতি করেছে এরআগে এতো ক্ষতি হয়নি। মানুষের ভোটাধিকার, সাংবাদিকে লেখার স্বাধীনতা বন্ধ করে দিয়েছে। এখন আমাদের অধিকার আদায় করার সময়। আমরা নির্বাচন চাই, তবে সেটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। তোমাদের অধীনে নয়। কিন্তু বিএনপি যাতে নির্বাচনে যেতে না পারে, সেই অসৎ উদ্দেশ্যে তারা মিথ্যা মামলা দিচ্ছে।

[৬] তিনি বলেন, সরকার বিদেশীদের বলছে; খুব ভালো নির্বাচন করবে। কিন্তু তারা এখনো আমাদের নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। র‌্যাবের স্যাংশনের পরও তারা এসব কাজ করছে। এবার তারা নতুন কৌশল নিয়েছে। ডিসি এসপি নতুন করে পোস্টিং দিচ্ছে। তারা নির্বাচনে ভোট কাটতে নিজেদের মতো প্রশাসন সাজাচ্ছে। আসলে ভয় পেয়ে এসব করছে। 

[৭] মির্জা ফখরুল বলেন, কোনোভাবেই দেশে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচন হবে না। এবার সব রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। বার বার ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান। এবার সেটি হবে না। জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন, কমিউনিস্ট পার্টি সবাই বলেছে, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। 

[৮] বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার ‘কুত্তামার্কা’ নির্বাচন করে। সর্বশেষ ঢাকা-১৭ আসনে নতুন মডেলের নির্বাচন দেখলাম। হিরো আলম বড় আশা নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। আওয়ামী লীগ কাউকে সহ্য করতে পারে না। ওরা দেশকে নিজেদের তালুকদারী মনে করে। অথচ দেশের সমস্ত মানুষ মিলে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলেন।

[৯] বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার বিদ্যুত খাতে ১৪ লাখ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। শুধু টাকা পাচারে ব্যস্ত। এদিকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। মশা মারার কোনো ব্যবস্থা নেই।

[১০] সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, শহীদের রক্তের কসম খেয়ে বলছি; শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছেড়ে ঘরে ফিরে যাবো না। আমরা এক দফার আন্দোলনে এই তরুণ সমাজ মাঠে থাকবো ইনশাআল্লাহ। এই সময় তিনি সমাবেশে মুষ্ঠিবদ্ধ হাত তুলে শপথ বাক্য পাঠ করান। 

[১১] সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, বিএনপির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির সহপ্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক মো. মোর্শেদ হাসান খান এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গুম পরবর্তী জেল খাটা সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলসহ বিগত আন্দোলনে বিএনপির যেসব নেতাকর্মী গুম খুনের শিকার হয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা। 

[১২] সমাবেশ যৌথভাবে পরিচালনা করেন যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল। 

[১৩] বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দল ও জোটগুলো আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করে ২৭ তারিখ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব